আমাদের স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক, ১৯২০ সালের ১৬ মার্চ খোকার জন্মদিন ছিল বাঙালির জন্য একটি শুভ সময়।
কারণ, সেই শিশু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন।
আরও খবর পেতে ভিজিট করুনঃ newsallx.com
আমাদের স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক
তার নেতৃত্বে হাজার বছরের ইতিহাসের পর বাঙালি বাংলাদেশ নামে একটি রাষ্ট্র পেয়েছে।
আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ২০০৪ সালে বিবিসির একটি বিশেষ জরিপে তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
বঙ্গবন্ধু পূর্ব বাংলার মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার প্রবল আকাঙ্ক্ষা জাগিয়েছিলেন।
জনগণকে সংগঠিত করে, লক্ষ্যে অবিচল থেকে এবং ত্যাগ স্বীকার করে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ জন্য তিনি অসম্ভব কষ্ট স্বীকার করেছেন,
জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, কিন্তু লক্ষ্য থেকে কখনো বিচ্যুত হননি।
তিনি তার জীবনের বহু বছর কারান্তরায় কাটিয়েছেন। তিনি বারবার বন্ডের বিনিময়ে গোয়েন্দাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেছিলেন, জীবন দেবেন কিন্তু বাংলার মানুষের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম ছাড়বেন না।
আমাদের স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক
বঙ্গবন্ধু মানুষের ভালোবাসার ঋণ রক্ত দিয়ে শোধ করেছেন।
কিন্তু তার কাছে আমাদের ঋণ, তা শোধ করব কীভাবে? বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে; শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে।
বঙ্গবন্ধু একাধিকবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। আগরতলা মামলায় সেনানিবাসে বন্দী থাকা অবস্থায় তাকে পেছন থেকে গুলি করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল।
সেই কারাগারে সার্জেন্ট জহুরুল হক শহীদ হন। পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান আগরতলা মামলায় তাকে ফাঁসি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
কিন্তু বাংলার মানুষ সত্তরের বীরত্বপূর্ণ গণআন্দোলন গড়ে তাকে মুক্ত করে।
তাকে আদর করে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়।
১৯৭১ সালে, পাকিস্তানের কারাগারের প্রচণ্ড উত্তাপে তাকে কেবল একটি নির্জন কক্ষে বন্দী করা হয়নি, মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
খবর পেয়ে তিনি সতর্ক হন
বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে নির্ভুলভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে এগিয়ে গেছেন। তিনি ছয় দফা ঘোষণা করেন, ইয়াহিয়া খানকে অফিসে লড়তে বাধ্য করেন।
তিনি জানতেন নির্বাচনে তিনি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন। নির্বাচন শেষ।
আওয়ামী লীগ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকশ্রেণী বাঙালিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ষড়যন্ত্র করে।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধু অসহযোগের ডাক দেন।
৭ মার্চের এক অবিস্মরণীয় ভাষণে তিনি বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে জনগণকে ঘরে ঘরে দুর্গ তৈরি করতে, যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকতে,
বাঙালি হত্যার কোনো চেষ্টা হলে শত্রুর মোকাবেলা করার নির্দেশ দেন।
তিনি স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার আহ্বান জানিয়েছিলেন, কিন্তু রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করে একটি শব্দও বলেননি।
বঙ্গবন্ধু অসহযোগের ডাক দেন
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে বঙ্গবন্ধু প্রথম ছুটে যান রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনগণের কাছে।
লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনে কর্মরত সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বেদ মারওয়া বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই ফ্লাইটে ভারত থেকে ঢাকায় আসেন। ২০০৬ সালের
৩১শে মার্চ প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে দেওয়া সাক্ষাৎকার থেকে আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি।
১০ জানুয়ারির ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আমি ফাঁসির মঞ্চে গেলেও বলব, আমি। বাঙালি, বাঙালি আমার ভাষা, বাঙালি আমার দেশ, স্বাধীন বাংলা, জয় বাঙালি।”
তিনি বলেন, এই স্বাধীনতা পূরণ হবে না, যদি বাংলার মানুষ ভাত না পায়, বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, যুবকরা চাকরি না পায়।
বঙ্গবন্ধু মানুষের ভালোবাসার ঋণ রক্ত দিয়ে শোধ করেছেন। কিন্তু তার কাছে আমাদের ঋণ, তা শোধ করব কীভাবে? বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে; শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে।
আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের 102তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।