স্বাধীনতা পুরস্কার পুনর্বিবেচনা করা উচিত, ‘এবার সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার সঠিক ব্যক্তিকে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে তা জাতির জন্য অসম্মানজনক।
এমন ব্যক্তি কীভাবে পুরস্কৃত হতে পারে, যা দুঃখজনক।
আরও খবর পেতে ভিজিট করুনঃ newsallx.com
স্বাধীনতা পুরস্কার পুনর্বিবেচনা করা উচিত
আমির হামজা নামের একজনকে ঘোষিত সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার পুনর্বিবেচনা করা উচিত মো. ‘শুক্রবার এফডিসিতে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইন্ডিপেন্ডেন্স
ডে ডিবেট কম্পিটিশন-২০২২’-এর গ্র্যান্ড ফিনালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো রাজাকারদের প্রকৃত তালিকা।’
রাজাকার ছাড়া বাকি সবাই কোনো না কোনোভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছে।
এটা ছিল জনযুদ্ধ। এটা ঠিক যে আমরা অনেক উন্নতি করেছি কিন্তু সমান সুযোগ ও সুশাসন বাস্তবায়িত হয়নি।
ফলে আমরা এখনো স্বাধীনতার নীতি থেকে অনেক দূরে। আমরা এখনো সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পাইনি। গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট দেওয়া নয়,
প্রকৃত গণতন্ত্র মানে সমান সুযোগ ও সামাজিক নিরাপত্তা। স্বাধীনতার বিরোধীদের চেয়ে এখন বড় সমস্যা হচ্ছে ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতা দখলের মানসিকতা। ‘
স্বাধীনতা পুরস্কার পুনর্বিবেচনা করা উচিত
সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, “স্বাধীনতার জন্য আমাদের যে দেশপ্রেম ছিল, আজ তা দেশপ্রেম নয়, আজ তা শুধুই আত্মপ্রেম। আজ সমাজের উন্নয়ন হচ্ছে না, মানুষের উন্নয়ন হচ্ছে।
যখনই বিপদ আসে। সমাজ, বিত্তবানরা বেশি বিকশিত হচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. গণেশ চন্দ্র সাহা।
অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল শুধু রাজনৈতিক মুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
আমাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি দরকার।
শোষণ, বঞ্চনা, নির্যাতন ও নিপীড়ন বন্ধসহ বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িকতা ও ন্যায়বিচারভিত্তিক দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গড়ে তোলা।
তবেই স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। যারা শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য রাজনীতি করে তারা যেমন জনগণের বন্ধু হতে পারে না, তেমনি যারা শুধু ক্ষমতায় যায় তারা জনগণের বন্ধু নয়।
সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা
রাজনীতিবিদদের মধ্যে যখন দেশপ্রেমের অভাব থাকে, তখন স্বাধীনতার স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
কিরণ আরও বলেন, “এবার স্বাধীনতা পদক প্রদান কমিটির জুরি কে ছিলেন আমি জানি না।”
এবারের স্বাধীনতা পদকের মতো রাষ্ট্রীয় মর্যাদার এত গুরুত্বপূর্ণ সম্মান একজন অচেনা-অচেনা লেখক কীভাবে পেলেন, সেটাই এখন প্রশ্ন। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন,
অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনসহ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের প্রায় সকলেই আমির হামজা নামের ওই ব্যক্তির বইটি পড়েননি বা জানেননি।
এর আগে ২০২০ সালে সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য রইজ উদ্দিন নামে একজনকে মনোনীত করা হলেও পরবর্তীতে নানা সমালোচনার কারণে রইজ উদ্দিনকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়নি।
স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে
সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রদানে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এর নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা উচিত।
স্বাধীনতা দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনালে ঢাকা সিটি কলেজকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের বিতার্কিকরা।
চ্যাম্পিয়ন দল বিতার্কিককে নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং
রানার্সআপ দলকে নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ ট্রফি, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন- অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম,
ডা. মোহাম্মদ শাহ আলম চৌধুরী ও সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয়।
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পৃষ্ঠপোষকতায় ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।