ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে, মঙ্গলবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে হেলথ ওয়াচের প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯: দ্য ফার্স্ট টু ইয়ারস অ্যান্ড দ্য ফিউচার’ শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য খাত দুটিই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতে সমস্যা চিহ্নিত করার পাশাপাশি বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও খবর পেতে ভিজিট করুনঃ newsallx.com
ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে
এটা সত্য যে কোভিড-১৯ বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা ছিল।
স্বাভাবিকভাবেই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, কিন্তু সেইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার যে বুদ্ধিমত্তার মধ্যে একটা বিশাল ফাঁক ছিল।
প্রথম দেখায়, স্বাস্থ্য বিভাগের কাজ তাদের বিভ্রান্ত বলে মনে হয়েছে।
এ অবস্থায় তারা যা করেছে তা অনেকটা অন্ধ হাতি দেখার মতো। স্বাস্থ্য খাত এমন একটি খাত যেখানে সামান্য ভুলই অস্বাভাবিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
পিপিপিই বিতরণ এবং কোভিড পরীক্ষার ক্ষেত্রে এটি ঘটেছে।
করোনার সময়ে শাহেদ ও সাবরিনার জালিয়াতির ঘটনা সবাইকে অবাক করেছে।
ঘটনার পর স্বাস্থ্য বিভাগ কিছুটা নড়েচড়ে বসেছিল এবং তাদের পরবর্তী পদক্ষেপগুলি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ নয় বরং সতর্ক ছিল।
ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে
এগুলো স্বাস্থ্য খাতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। করোনা মোকাবিলার বাইরেও অনেক সমস্যা ছিল।
বিশেষ করে ভুল তথ্য, গুজব, অতিরঞ্জিত ও অসত্য খবর মানুষকে আতঙ্কিত করেছে। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল করোনা চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়েছে।
এ কাজে ধর্মকেও ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও একই ধরনের অপপ্রচার দেখেছি।
এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের যেভাবে এগিয়ে আসা দরকার ছিল তাতে ঘাটতি ছিল। সরকারি প্রচারণায়ও দুর্বলতা ছিল।
গত করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে সবচেয়ে বেদনাদায়ক বিষয়গুলো ছিল রোগ নির্ণয়, রোগীর জন্য জিনিসপত্র ক্রয়, নমুনা পরীক্ষার কিট ক্রয়, কোভিড-১৯ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং সাধারণ ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি।
কোভিড ১৯ নিয়ে কাজ করার জন্য ৪০ টিরও বেশি কমিটি ছিল, কিন্তু তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল।
সরকারি প্রচারণায়ও দুর্বলতা ছিল
প্রাথমিকভাবে শুধু আইইডিসিআরে করোনা পরীক্ষা করা হতো এবং তিনটি সরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করা হতো। হাসপাতালে সাধারণ ও আইসিইউ শয্যা,
জনবল, আইসোলেশন ইউনিট, পিপিই সংকট ছিল।
সত্য যে মাত্র ৫০ শতাংশ হাসপাতালে কিছু আইসিইউ সুবিধা রয়েছে এবং ৭২ শতাংশ হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট রয়েছে তা স্বাস্থ্যসেবা ক্ষমতার ইঙ্গিত নয়।
৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দুর্নীতি ও সুশাসনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ড. মোশতাক হোসেন বলেন, দেশ করোনা মোকাবিলায় ভালোভাবে প্রস্তুত এবং সে কারণেই দেশে মৃত্যুর হার অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় কম।
তবে এটা স্বীকার করতেই হবে যে স্বাস্থ্য খাতে সরকারের মনোযোগ ও বাজেট বরাদ্দ কম।
স্বাস্থ্যসেবা ক্ষমতার ইঙ্গিত নয়
সরকার এসব সুপারিশ মানবে কি না সেটাই দেখার বিষয়।
অতীতে এমন অনেক সুপারিশ আমলে না নেওয়ায় স্বাস্থ্য খাতের আজ বেহাল দশা।
যদিও করোনারি হার্ট ডিজিজ বর্তমানে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে, তবে ঝুঁকি চলে গেছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই।
এই সময়ে প্রাদুর্ভাব আরও বেড়ে যায় বলে মনে হচ্ছে।
করোনা আমাদের যা শিখিয়েছে তা বিবেচনা করে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ এবং জনবল দুটোই বাড়াতে হবে।
আর বরাদ্দ ব্যয় ও ক্রয়ের ক্ষেত্রে কঠোর নজরদারি থাকতে হবে।
অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা না নিয়ে স্বাস্থ্য খাতে ‘শহীদ ও সাবরিনা-কান্ড’ বন্ধ করা যাবে না।