এক টুকরো কাগজের জন্য জমি যায়

এক টুকরো কাগজের জন্য জমি যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ঘোড়াপাখিয়া মৌজায় পদ্মার চরের জমিতে এখন ফসল কাটা পালিত হচ্ছে।

আরও খবর পেতে ভিজিট করুনঃ newsallx.com

এক টুকরো কাগজের জন্য জমি যায়

জমি থেকে পেঁয়াজ তুলছিলেন কৃষক আবু বক্কর (৫৮)।

দুই বছর আগে নদীতে ভেসে গিয়ে তার জমি আবার জেগে উঠেছে।

এখন তিনি এই জমির মালিক হবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কিত।

নিয়ম অনুযায়ী নদীতে হারিয়ে যাওয়া জমি শিক্ষাস্তি হয়ে যায়। পরে জেগে উঠলে তা সরকারের খাস খতিয়ানে পয়স্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।

জমির মালিকানা ফিরে পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ভাড়ার রশিদ জমা দিতে হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহসিন মৃধা জানান, নদী ভাঙ্গনে এটি ভেসে যাওয়ার পর জরিপ শনাক্ত করা হয়েছে।

৩০ বছরের মধ্যে এসব জমি জেগে উঠলে সরকারকে লিজ (বন্দোবস্ত) নিতে হবে।

এক টুকরো কাগজের জন্য জমি যায়

কৃষক আবু বক্কর বলেন, ‘পৈতৃক জমি। দুই বছরে লোদ্দি (নদী) বেড়েছে।

এখন শুনি খাস চলে গেছে। এসব কৃষক আইন নিয়ে খুবই বিরক্ত। ‘

আবু বক্কর আরও জানান, পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে জমি চাষ করছেন।

জমি অধিগ্রহণের সময় কোনো ভাড়া নেওয়া হয়নি।

এখন তার কাছে ভাড়ার রশিদও নেই। ঘুম থেকে উঠে ভূমি জরিপকারীরা জানান, খাস খতিয়ানে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে।

আপনি যদি এখন ভাড়ার রশিদটি না দেখান তবে এটি তার (আবু বক্করের) নামে আর লিপিবদ্ধ হবে না।

শিবগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াপাখিয়া উপজেলার ঘোড়াপাখিয়া মৌজায় ডিজিটাল ডায়রা জরিপ চলছে।

জমির মালিকানা বা সীমানা চিহ্নিত করতে ভূমি জরিপ বিভাগ কাজ করছে।

তবে এ মৌজায় চাষাবাদ করা কৃষকরা জরিপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

খাস খতিয়ানে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে

ঘোড়াপাখিয়া মৌজায় জমি রয়েছে এমন আরেক কৃষকের নাম পিয়ার আলী।

১২ জানুয়ারি ঘটনাস্থলে গেলে পিয়ার আলী মাটিতে বাঁশের লাঠি দেখায়। তারপর বললেন, ‘লোদ্দির জল নামা যাওয়ার পর বাপে বাঁশ লাগিয়েছে।

এখন জুদিল (যদি) কেউ (কেউ) বলে (বলে) এই থপ তোমার্গে লয়, সরকার তেবে (কিন্তু) মনে কি বলবে।

হামরা যদি এক টুকরো কাগজের (খাজনার রশিদ) খোঁজ নেয়, তবুও আমি আমার বাপ-দাদার এই জমির মালিকানা ছাড়ব না। ‘

সম্প্রতি ঘোড়াপাখিয়া মৌজায় কথা হচ্ছে। জামাল, হযরত আলী, আহসান আলী, মাসিদুল হক, লিয়াকত আলী এবং আরও কয়েকজন কৃষকের সাথে।

তাদের মতে, এই মৌজায় জমি আছে এমন কিছু লোক খাজনা দিচ্ছে।

অনেকের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। দিয়ারা জরিপ দলের লোকজন বলছেন, যার নামে খাজনার রশিদ আছে তার নামে জমি রেকর্ড করা হবে।

সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জমি জরিপকারীদের বিরুদ্ধে কৃষকদের অভিযোগ।

বাকি জমি সরকারের খাস খতিয়ানে

জামাল, হযরত ও আহসান নামের ওই কৃষক জানান, জরিপ শুরু হয় ২০২০ সালে।

মাঝে মাঝে করোনা পরিস্থিতির কারণে বন্ধ থাকে। এরপর আবার জরিপের কাজ শুরু হয়েছে।

প্রথমে জমি চিহ্নিত করতে গিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা নেন জরিপ দলের সদস্যরা।

আরেকটি নতুন দল এসে বললো তাদের আবার টাকা দিতে হবে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

জরিপ বিভাগের রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান (দিয়ারা অপারেশন) ফজলুল করিম জানান, তিনি জমির আইল (সীমানা) রাখবেন। যার কাগজ আছে, রেকর্ড তার নামেই থাকবে। এতে কোনো টাকা লাগে না।

কারও কাছ থেকে জমির খাজনা নেওয়া হোক বা না নেওয়ার বিষয়ে ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) আবদুল হামিদ বলেন,

জমি খালাস হওয়ার পর জমির ভাড়া শুরু করতে জমির মালিকদের জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করতে হয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ করেননি। এ ক্ষেত্রে তহসিলদারের কিছু করার নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *