আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হেলমেট বাহিনী, নিজের চেহারা লুকানোর জন্য হেলমেট পরে সহিংসতা
বা হামলায় অংশ নেওয়া এখন একটি নতুন প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ধরনের হামলাকারীরা
‘হেলমেট বাহিনী’ নামে পরিচিত। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চার বছর আগে গড়ে ওঠা
আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর প্রথমেই সামনে আসে হেলমেট বাহিনী। গত সপ্তাহে
নিউমার্কেট এলাকায় সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডে আবারও আলোচনায় এসেছে হেলমেটধারী দুর্বৃত্তরা।
২০১৬ সালের মতো এবারও হেলমেট পরা হামলাকারীদের মধ্যে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী হিসেবে
শনাক্ত করা হয়েছে।বিভিন্ন হামলা ও সংঘর্ষে ‘হেলমেট বাহিনী’ আলোচনায় এলেও তাদের চিহ্নিত করে আইনের
আওতায় আনার নজির নেই। এ ধরনের ঘটনায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের জড়িত
থাকার বিষয়টি প্রতিবারই আলোচিত হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ কখনোই এ বিষয়ে তদন্ত ও ব্যবস্থা
নেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
আরও নতুন নিউস পেতে আমাদের সাইট:newsallx.com
আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে হেলমেট বাহিনী
ছাত্রলীগকে সাংগঠনিক কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ফলে দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ‘হেলমেট বাহিনী’।গত ৪ ও ৫ আগস্ট হামলায় অংশ নেওয়া হেলমেট পরা যুবকরা ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী। তাদের নাম-পরিচয়ও তখন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘হেলমেট বাহিনী’ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ওই ঘটনায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নামও উঠে আসে।তবে এবার নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনার পর তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ।গত সপ্তাহে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় হেলমেট পরিধানকারীদের কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মী নাহিদ হোসেনকে ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে হত্যা করতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত শনাক্তকৃতরা ঢাকা কলেজের ছাত্র ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। একই দিনে দোকানদার মোরসালিনকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে হেলমেট পরা যুবকরাও রয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিবি
যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নিউমার্কেট এলাকায় হেলমেট পরে সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা সন্ত্রাসী। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল রাতটি ছিল কোটা সংস্কার আন্দোলর সবচেয়ে রোমাঞ্চকর মুহূর্ত। ৬ এপ্রিল মধ্যরাতে হেলমেট পরা একদল সশস্ত্র যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মহড়া দেয়। তাদের কেউ কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায়ও অংশ নেন। পরে জানা যায়, হেলমেট পরা অস্ত্রধারী যুবক ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।২০১৬ সালের ২৯শে জুলাই ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া খানম ও আবদুল করিম নিহত হন। ৪ আগস্ট আন্দোলনের সপ্তম দিনে জিগাতলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। রাজধানীর ধানমন্ডি ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় মো. হামলাকারীরা পুলিশের সঙ্গে ছিল। তাদের মাথায় হেলমেট এবং হাতে রড, লাঠি, রামদা ও চাপাতি ছিল। বেশ কয়েকজন
যুবকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে
পরদিন ৫ আগস্ট আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর আবারও হামলা হয়। হেলমেট পরিহিত ব্যক্তিরা সেদিন সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় হামলা চালায়। তারা বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে। হামলাকারীরা পুলিশের সামনে সশস্ত্র মহড়া চালায়। পরে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে এবং গণমাধ্যমে অনুসন্ধান করে জানা যায়, হেলমেট পরিহিত যুবকরা ৪ ও ৫ আগস্ট হামলায় অংশ নিয়েছিল ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।তাদের নাম-পরিচয়ও তখন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘হেলমেট বাহিনী’ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ওই ঘটনায় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নামও উঠে আসে।ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এটিএম মইনুল হোসেন বুধবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, আগের ঘটনার সময় তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন না। তাই তাদের সম্পর্কে কিছু বলতে পারছেন না।