দুই দলের বিরোধ প্রকাশ্যে ২০ নেতার আবেদন

দুই দলের বিরোধ প্রকাশ্যে ২০ নেতার আবেদন, নবগঠিত বরিশাল নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে দুই দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।

মহানগর বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি গঠন এবং সম্প্রতি ৩০টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করায় এ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে।

আরও খবর পেতে ভিজিট করুনঃ newsallx.com

দুই দলের বিরোধ প্রকাশ্যে ২০ নেতার আবেদন

নবগঠিত নগর কমিটি থেকে বাদ পড়া নেতারা গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে কেন নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন তার ব্যাখ্যা চেয়ে আবেদন করেছেন।

মহানগর বিএনপির আগের কমিটির শীর্ষ ২০ নেতা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে এ অনুরোধ জানান।

বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহানের সঙ্গে দেখা করে তারা আবেদনের অনুলিপিও দেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিলকিস আক্তার জাহান।

আবেদনে বঞ্চিত নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি বরিশাল মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির ২০ সদস্যকে আমরা চিনি না।

দুই দলের বিরোধ প্রকাশ্যে ২০ নেতার আবেদন

তারা গত ১০-১২ বছরে দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না।

কিন্তু ওই ব্যক্তিদের আহ্বায়ক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু নবগঠিত আহবায়ক কমিটিতে বর্তমান অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে ১০ বছর ধরে নির্যাতিত,

কারাবরণ, লাঞ্ছিত ও মামলার শিকার মহানগর বিএনপির ১৮১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

এই বিদ্রোহী নেতাদের কেন আহ্বায়ক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে আবেদনে বলা হয়েছে।

আবেদনের নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সহ-সভাপতি আব্বাস উদ্দিন, সৈয়দ হাসান, মো: আলম, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ আকবর, আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মহসিন মন্টু,

সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল হক, আইনজীবী ড. শহীদ তাদের একজন।

একইসঙ্গে সম্প্রতি মহানগর বিএনপির ৩০টি ওয়ার্ড কমিটি কোনো আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ করে ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতারা।

নেতাদের কেন আহ্বায়ক কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩ নভেম্বর বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৮১ সদস্যের

পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙে দিয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়।

মনিরুজ্জামান খানকে আহ্বায়ক, আলী হায়দারকে এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক ও মীর জাহিদুল কবিরকে সদস্য সচিব করা হয়।

এরপর ২২ জানুয়ারি ৪১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। আগের ১৮১ সদস্যের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ নেতারা জায়গা পাননি।

এর আগে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটির জন্য কেন্দ্রে নাম জমা দিলে মহানগরের আগের কমিটির অন্তত ৩১ নেতা এতে আপত্তি জানান।

তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তাদের আবেদন আমলে নেওয়া হয়নি।

বিএনপি একটি বড় দল। এখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ভুল থাকতে পারে।

কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ নেতারা জায়গা পাননি

যে কোনো কমিটিতে একজন যোগ্য-ত্যাগীকে বাদ দেওয়া যেতে পারে, এবং তাদের সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।
বিলকিস আক্তার জাহান,

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, বিএনপি বরিশাল মহানগর বিএনপি বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমানকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে।

দলের নেতৃত্বের পাশাপাশি তিনি সদর আসনের সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলেন। তার নেতৃত্বে নগর কমিটি

ভেঙে দিয়ে যারা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছেন তারা নগর বিএনপির রাজনীতিতে মুজিববিরোধী হিসেবে পরিচিত।

নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেন, “এটা সত্য যে মুজিবুর রহমান নগর বিএনপির রাজনীতির প্রাণ ছিলেন। দলের হাইকমান্ড তাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তার নেতৃত্বে আমরা সবাই চরম সংকটে ছিলাম।

আমাদের অপরাধ কী? রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মী ছাড়াও নিষ্ক্রিয় সরকারি দলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে জড়িতদের নিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এটাই শালীন কাজ, সেখানেই শেষ হওয়া উচিত।”

ওয়ার্ডে পাল্টা কমিটি গঠনের হুমকি বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করায় মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

প্রায় ১০টি ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

২২নং ওয়ার্ডে সদ্য বিলুপ্ত হওয়া বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ৩৭ বছর ধরে দলের জন্য কাজ করে আসছি,

এই সরকারের আমলে রাজপথে আন্দোলন করে ২৪টি মামলার আসামি হয়েছি।

আমাকে নিষ্ক্রিয় থাকার কথা বলা হয়েছে।বর্তমান মহানগর নেতাদের এমন স্বেচ্ছাচারিতায় ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।

আমরা কেন্দ্রে পাল্টা ওয়ার্ড কমিটি পাঠাব।ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবেন। ভবিষ্যৎ।’

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির বলেন, মহানগরের ৩০টি ওয়ার্ড কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *